
জাহিদুল ইসলাম, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ
খুলনার কয়রায় শনিবার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পিআর (প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচি অংশ হিসেবে বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে কয়রা উপজেলা শাখা।
উপজেলা আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান এর সভাপতিত্বে হাজার হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে উপজেলার রাজপথ ছিল উত্তাল। ২৭ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকাল ১০টায় কয়রা উপজেলা সদরের কপোতাক্ষ কলেজ চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা থানার মধুরমোড় অভিমুখে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে, জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন চায় জামায়াত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক( কয়রা- পাইকগাছা) জামায়াত মননীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে না, বরং ছাত্র জনতার বুকের রক্তে অর্জিত গণ-অভ্যুত্থানের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায়।
মাওলানা আজাদ দাবি করেন, দল জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী সংসদ নির্বাচন দেখতে চায়। তিনি জনগণের মতামতের ভিত্তিতে আগামী সংসদে সকল দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি আরও অঙ্গীকার করেন যে, জামায়াত আগামী সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেলে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে সাথে নিয়ে 'নতুন বাংলাদেশ' গড়ে তোলা হবে।
পিআর পদ্ধতির দাবি ও সরকারের নীরবতা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মাওলানা আজাদ উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সহ দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এই দাবির স্বপক্ষে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তিনি বলেন, এ কারণেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে।
কয়রা উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা শেখ সাইফুল্লাহর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মোঃ অলিউল্লাহ, উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা সুজা উদ্দিন এবং হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সমাবেশের শেষে, জামায়াত নেতৃবৃন্দ কয়রা উপজেলার ৫৬টি দুর্গাপূজা মণ্ডপের আয়োজকদের সঙ্গে এক আন্তরিক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এই সভায় জামায়াত নেতৃবৃন্দ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং দুর্গাপূজার সার্বিক সফলতার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।নেতৃবৃন্দ বলেন, "ধর্ম যার যার, উৎসব সবার"—এই নীতিতে বিশ্বাসী জামায়াতে ইসলামী দুর্গাপূজাকে একটি জাতীয় উৎসব হিসেবে দেখে। তারা কয়রার প্রতিটি পূজা মণ্ডপে শান্তি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার সাথে যেন উৎসব পালিত হয়, সেজন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
মতবিনিময় শেষে, জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজা মণ্ডপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাতে নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দেওয়া হয়। জামায়াতের এই পদক্ষেপ স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিয়েছে এবং সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জামায়াত নেতৃবৃন্দ আশা করেন, এই সহযোগিতা পূজার আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : খোকন হাওলাদার, যোগাযোগ : আমির উদ্দিন সুপার মার্কেট (২য় তলা), নিশ্চিন্তপুর (দেওয়ান পাম্প সংলগ্ন), আশুলিয়া, ঢাকা- ১৩৪৯, বার্তা কক্ষ: ০৯৬৯৬৮২০৬৮১, ইমেইল : ajkerpratidin@gmail.com।
Ajker Pratidin গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান © 2018-2024 ajkerpratidin.com সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।