
সম্রাট আলাউদ্দিন, ধামরাই (ঢাকা) : ঢাকার ধামরাইয়ে তিন দিন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করেছেন বিদ্যালয়টির দপ্তরি হযরত আলী। দুই দিন হযরত আলী পাঠদান করালেও মঙ্গলবার তিনিও তার পরিবর্তে লোক রেখে গেছেন নিজের কাজে, এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।ধামরাই উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের ৯৭ নং রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে এর সত্যতা মেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে সেলিনা আক্তার নামের সহকারি শিক্ষক গত ১৫ জানুয়ারি পিটিআই ট্রেনিংয়ে চলে যান, মোনালিসা হক কনা নামের অপর শিক্ষক রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং শর্মিষ্ঠা দাস সুমা নামে এক শিক্ষক গত বছরের জুন মাস থেকে ডেপুটেশনে ঢাকার মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন। তবে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানা ও সহকারী শিক্ষক জহুরা জেসমিন এতোদিন বিদ্যালয়ের পাঠদান করে আসলেও গত রবিবার থেকে ওই দুই শিক্ষকও যান সরকারি ট্রেনিংয়ে। ফলে বাধ্য হয়েই দপ্তরি হযরত আলী একাই বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। কিন্তু মঙ্গলবার হযরত আলী তার ফুপাতো ভাইকে বিদ্যালয়ে রেখে তিনিও যান দাওয়াতে।এবিষয়ে সহকারি শিক্ষক জহুরা জেসমিন বলেন, আমাদের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা লিয়াকত হোসাইন স্যার ট্রেনিং করতে নামের তালিকা দিয়েছেন। কিন্তু আমরা বিদ্যালয়ের বিষয়টি জানালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেন নি।বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানা বলেন, বিদ্যালয়ে আমরা মাত্র দুই জন শিক্ষক রয়েছি।
আমাদের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা লিয়াকত হোসাইন স্যার ট্রেনিং করতে আমাদের নামের তালিকা দিয়েছেন। কিন্তু সরকারি ট্রেনিং এ যাওয়ার আগে লিয়াকত স্যার কে বিষয়টি জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেন নি।এর পরেও সরকারি ট্রেনিং এর জন্য আমাদের পাঠানো হয়। এখন পুরো স্কুলে শুধু দপ্তরি হযরত আলীই রয়েছেন।স্থানীয় এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মিজানুর রহমান বলেন, আমরা জানি বিদ্যালয়টিতে ৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। ৫ জন শিক্ষক থাকতেও কেন দপ্তরি পাঠ দান করাবেন। আর দপ্তরিই বা কেন তার আত্মীয়কে স্কুলে রেখে দাওয়াতে যাবেন। এই বিদ্যালয়টি আসলে কোন নিয়মে চলছে। এমন করে একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না।
এব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।এবিষয়ে দপ্তরি হযরত আলী বলেন, স্কুলে কোন শিক্ষক নেই দুই দিন নিজেই ম্যানেজ করার চেষ্টা করেছি। মঙ্গলবার কিছু সময়ের জন্য স্কুল ছেড়ে গিয়েছিলাম। আমার তো শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা দায়িত্ব নয়। শিক্ষকরা কেউ ছুটিতে কেউ ট্রেনিং এ ররেছেন। পুরো স্কুলে কোন শিক্ষক নাই।রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশুতোষ মন্ডল বলেন, আমি বিদ্যালয়ের ব্যাপারে আজই জেনেছি। গত তিন দিন ধরে দপ্তরি ছাড়া স্কুলে কোন শিক্ষক নেই। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
ধামরাই উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা লিয়াকত হোসাইনের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।ধামরাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাজমুন নাহারের অফিসে গিয়ে অফিস কক্ষে তালা দেখা গেছে। এব্যাপারে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মো: আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, এভাবে একটি বিদ্যালয় চলতে পারে না।
এব্যাপারে দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আজিজ বলেন, স্কুল কখনো শিক্ষক শূন্য থাকতে পারে না। এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : খোকন হাওলাদার, যোগাযোগ : আমির উদ্দিন সুপার মার্কেট (২য় তলা), নিশ্চিন্তপুর (দেওয়ান পাম্প সংলগ্ন), আশুলিয়া, ঢাকা- ১৩৪৯, বার্তা কক্ষ: ০৯৬৯৬৮২০৬৮১, ইমেইল : ajkerpratidin@gmail.com।
Ajker Pratidin গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান © 2018-2024 ajkerpratidin.com সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।