
সম্প্রতি বিভিন্ন ঘটনায় আলোচিত মাওলানা আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে গ্রেপ্তার করে তিন মাসের আটকাদেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের এক বার্তায় বলা হয়, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুরোধের ভিত্তিতে আতাউর রহমান বিক্রমপুরীকে নরসিংদী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে বিশেষ ক্ষমতা আইনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৯০ দিনের আটকাদেশে তাকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এ পাঠানো হয়।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এটা সরকারের নির্বাহী আদেশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আদেশ জারি করে। বিশেষ ক্ষমতা আইনে সরকারের একটা এখতিয়ার আছে।
“এটা আদালতের বিষয় না, সরকারের এখতিয়ার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন কোনো ব্যক্তিকে সমাজের জন্য, দেশের জন্য তার কর্মকাণ্ড খুব বিপজ্জনক, ক্ষতিকর মনে করে, তখন সরকার চাইলে তাকে আটক করতে পারে।”
মঙ্গলবার রাত থেকেই আতাউর রহমান বিক্রমপুরীর ভক্ত ও অনুসারীরা তার বিষয়ে ফেইসবুকে লেখালেখি করছিলেন। ভৈরব থেকে বাসে করে আসার পথে বাস থামিয়ে তাকে মাইক্রোবাসের তুলে নেওয়া হয় বলে তার অনুসারীদের দাবি।
তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না, কিংবা ঠিক কী অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি পুলিশ। তাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বেশ সরব ছিলেন এবং নানা কারণে আলোচনায় ছিলেন।
ফ্যাক্টচেকার, সাংবাদিক কদরউদ্দিন শিশিরের ফেসবুক পোস্ট এর বরাত দিয়ে গত ৭ মার্চ দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্রমপুরী তার ওয়াজ, অনলাইন বয়ান ও ফেইসবুকে ‘অতি উগ্র কথাবার্তা প্রচারের জন্য’ পরিচিত। তিনি ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রথম আলোর সামনের বিক্ষোভে এবং সেখান থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া কয়েকজনকে থানা থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নেয়ায় ‘নেতৃত্ব’ দিয়েছিলেন।
বিক্রমপুরী ২০২১ সালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদন্য হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলেও ওই প্রতিবেদনে তথ্য দেওয়া হয়।
গত ১৮ ডিসেম্বর প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনাতেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিক্রমপুরীর নাম আসছিল। তার ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে ওই হামলার সমর্থনে কিছু পোস্টও দেখা যায়।
বিক্রমপুরী বৈষম্যহীন কারামুক্তি আন্দোলনের একজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওই সংগঠনের ফেইসবুক পেইজে এক পোস্টে বলা হয়, “ “আমরা কয়েকদিন যাবত নিরিহ মানুষের গ্রেফতার দেখতেছি। সরকার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করতেছে। আমরা জানতে চাই বিক্রমপুরী প্রথম আলোর সামনে গিয়ে ভাংচুর করেছে এমন কোনো ফুটেজ কেউ দেখাতে পারবেন? বৈষম্যহীন বাংলাদেশে আবারো নতুন করে বৈষম্য হচ্ছে নাতো?”