
নিজস্ব প্রতিবেদক : বংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে সাতক্ষীরা জেলা। ভৌগোলিক কারণে এ জেলার গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন (সাতক্ষীরা সদর+দেবহাটা) ১০৫ সাতক্ষীরা -০২। নানাদিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটি স্বাধীনতা পরবর্তীকাল থেকে রয়ে গেছে অবহেলিত। জনকল্যাণমুখী নেতৃত্ব না থাকার কারণে হয়নি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন।

এ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এই অবহেলিত জনপদের মানুষের সেবা ব্রত নিয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ৩নং সখীপুর ইউনিয়নের সন্তান অ্যাডভোকেট মাহমুদুল আলম শাহীন।
২০০০ সাল থেকে তরুণ বয়সেই রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ করে ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনীতির ভুবনে নিজের বলিষ্ঠ অবস্থান অনেকটাই নিশ্চিত করেছেন তিনি। তারেক রহমানের ভিশন ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠায় তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-০২ আসনের প্রার্থী হতে চান শাহীন। দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় রাজনীতি সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে মাহমুদুল আলম শাহীনকে ওই আসনে ধানের শীষের কান্ডারী হিসেবে দেখতে চায় সাধারণ জনগন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে চ্যালেঞ্জিং। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সরকার গঠন করতে হলে নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে এবং তিনটি শর্তে প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। বিপুল টাকার মালিক এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সখ্য আছে, কিন্তু জনবিচ্ছিন্নসহ সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা নেই, এমন প্রার্থী মনোনয়ন পাবেন না। প্রার্থী নির্বাচন করতে সমাজে যাদের ক্লিন ইমেজ, রাজনৈতিক ঐতিহ্য, সংগঠনের জন্য কতটুকু ত্যাগ, সাংগঠনিক দক্ষতা, দলীয় নেতাকর্মীদের দুর্দিনে অবদান রাখাসহ দলের আদর্শের প্রতি কতখানি অনুগত রয়েছে, এসব খতিয়ে দেখে প্রার্থী বাছাই করলে অ্যাডভোকেট মাহমুদুল আলম শাহীন সেই তালিকায় থাকবে।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন :
মাহমুদুল আলম শাহীন এর জন্ম ১৯৮৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার সখীপুর গ্রামে। পিতা এলাহি বক্স গাজী ও মাতা মৃত মোমেনা খাতুনের স্নেহ ও আদর্শে বেড়ে ওঠেন তিনি। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় ১নং ওয়ার্ড সখীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। তিনি ২০০২ সালে এসএসসিতে মানবিক বিভাগে এ গ্রেড পয়েন্ট নিয়ে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে এইচএসসি খান বাহাদুর আহসানুল্লাহ কলেজ(২০০৪ ) সালে মানবিক বিভাগে সর্বোচ্চ রেজাল্ট নিয়ে সম্পন্ন করেন।
শিক্ষাগত উৎকর্ষতার ধারাবাহিকতায় ২০০৫ মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হন। ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে বিএ অনার্স ও ২০০৯ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে একই বিভাগে এমফিল করার জন্য ভর্তি হলেও আওয়ামী লীগ শিক্ষকদের কারণে সম্পন্ন করতে পারেননি। ২০১২ সালে এলএলবি ভর্তি হন ২০১৫ এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন। এবং ২০১৮ সাল থেকে আইন পেশায় নিয়োজিত করেন। ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। দেবহাটা উপজেলা থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু তার।
ছাত্র রাজনীতি ও নেতৃত্বের সূচনা:
রাজনীতির হাতেখড়ি হয় ছাত্রদল থেকে। ২০০২ সালে কে বিএ কলেজ থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু। উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য হিসেবে নেতৃত্বের প্রাথমিক পরিচয় দেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার পরে শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। এবং ২০০৯-২০১৪ পর্যন্ত ঢাবি শেখ মুজিবুর রহমান হলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। দীর্ঘ হল কমিটি না হওয়া এবং হাসিনা বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের পরে ২০১৪ রাজিব- আকরাম কমিটিতে সহ যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি ষষ্ঠ কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করে সারা বাংলাদেশে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে সর্বশেষ দেশ নায়ক তারেক রহমানের বিবাহিত ইস্যুর সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সহ জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে ২০২২ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
জাতীয় রাজনীতিতে উত্তরণ :
ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বর্তমান সহ-জলবায়ু সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাংগঠনিক দক্ষতা, সামাজিক চেতনা, সততা এবং নেতৃত্বের গভীরতা তাকে এই পদে নিয়ে এসেছে।
সংগ্রাম ও নিপীড়নের ছায়া :
রাজনীতির পথ কখনোই সহজ ছিল না অ্যাডভোকেট মাহমুদুল আলম শাহীন এর জন্য। ওয়ান ইলেভেনের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফখরুদ্দিন মইনুদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সক্রিয় ভূমিকা পালন করি। সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে ঢাকার রাজপথ থেকে বারবার জেলে যেতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত নাশকতাসহ মোট ৫ টি মামলা হয়েছে এবং ৩ বার কারাভোগ করতে হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে নির্বাচনের পরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে বিএনপি’র পল্টন অফিসের সামনে থেকে ডিবি কর্তৃক গ্রেপ্তার হই।
অ্যাডভোকেট মাহমুদুল আলম শাহীন শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন, বরং তিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক সাহসী যোদ্ধা। শিক্ষা, সামাজিক সাংগঠনিক দক্ষতা এবং আত্মত্যাগের মশালে গঠিত তার রাজনৈতিক জীবনবৃত্তান্ত নতুন প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে। আগামী দিনে তার অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বগুণ এবং সংগ্রামের ইতিহাস জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, এ প্রত্যাশা সাতক্ষীরা-০২ আসনের সাধারণ মানুষের এবং দেশের আপামর জনতার।
অ্যাডভোকেট মাহমুদুল আলম শাহীন বলেন, যৌবনের প্রথম প্রেম হয় ছাত্রদলের সাথে সেই সাতক্ষীরা কে বি এ কলেজ থেকে ছাত্র রাজনীতি শুরু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদে সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাথে দীর্ঘ সময় সুনামের সাথে ছাত্র রাজনীতি করেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে আন্দোলন করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করার পরও জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিতে নিজেকে বিসর্জন দিয়েছি। চাইলে বিসিএস ক্যাডার হতে পারতাম। কিংবা সরকারি যে কোন চাকরি করে নিজের জীবনটা আলাদাভাবে উপভোগ করতে পারতাম জীবনটা অন্যরকম হতো।কিন্তু দীর্ঘ সময় হাসিনা বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে কয়েকবার কারাবরণ করেছি। পুলিশের লাঠিচার্জ শিকার হয়ে আহত হয়েছি।সাতক্ষীরা-০২ নির্বাচনী এলাকা বিএনপিকে গতিশীল করতে নিরলস কাজ করে আসছি বলে মানুষও আমাকে গ্রহণ করেছে। মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হওয়া দরকার। সে কারণেই আমি ধানের শীষের মনোনয়ন চাই।
তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আন্দোলনে যারা ছিল, যাদের মধ্যে পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও দলের প্রতি কমিটমেন্ট আছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে যার গ্রহণযোগ্যতা আছে- তেমন নেতাকে আগামী নির্বাচনে দলের নমিনেশন দেওয়া হবে। সে হিসেবে দলের প্রত্যাশা অনুযায়ী মাহমুদুল আলম শাহীন ২৩ বছর রাজনীতি জীবনে নিজেকে তৈরি করেছেন।