আনোয়ার হোসেন, যশোর প্রতিনিধিঃ যশোর বেনাপোল অস্ত্র ঠেকিয়ে ৭ ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের দুইদিন পর পুলিশেরএক অভিযানে উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় আটক হয়েছে ঘটনার প্রধান আসামি সুমন হোসেন (২২)
গতকাল বুধবার (১০ই সেপ্টেম্বর) সকালে আটককৃত আসামিকে যশোর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিরাপদ হেফাজতে প্রেরণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আটককৃত সুমন বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘীরপাড় গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত সোমবার (৮ই সেপ্টেম্বর) বেলা ১টার দিকে বেনাপোল কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের সামনে থেকে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার (৯ই সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগীর মা শিখা খাতুন বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের করে।
অভিযোগে বলা হয়, কাগমারী গ্রামের জাহিদ হোসেনের মেয়ে জাকিয়া পারভীন (১৪) কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে ৭ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শেষে মা শিখা খাতুন তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় স্থানীয় দুর্বৃত্ত সুমন হোসেন (২২)ও তার সহযোগী জিসান (২২), নাইমুর (২৬) সহ আরও ১০-১২ জন মোটরসাইকেল একটি প্রাইভেটকার নিয়ে তাদের পথরোধ করে।
এ সময় শিখা খাতুনকে বেধড়ক মারধর করে জিসান ও নাইমুর। পরে সুমন অস্ত্রের মুখে জাকিয়াকে জোর করে প্রাইভেটকারে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। শিখা খাতুনের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলেও দুর্বৃত্তরা কিশরী ছাত্রীটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর জাকিয়ার মা শিখা খাতুন ৩ জনের নাম উল্লেখ করে বেনাপল পৌট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর তদন্তভার পায় এসআই (নিঃ) মোহাম্মাদ মামুন শেখ। পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি সুমন হোসেন কে আটক করে এবং অপহৃত স্কুলছাত্রী জাকিয়া পারভীনকে উদ্ধার করে।
কাগমারী কিন্ডার গার্ডেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে স্কুলছাত্রীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করা সত্যিই ভয়াবহ ঘটনা। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত সব আসামিকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।
এদিকে থানা অভ্যন্তরে থাকা উদ্ধারকৃত ভিকটিম জাকিয়া জানায়, আমার মা সুমনের বিরুদ্ধে অপহরণের মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। তার সাথে দীর্ঘদিনের প্রেম থাকায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছি। এখানে তাদের সাথে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। সে তার স্বামীকে যাতে জেলখানায় না দেয়া হয় এবং তারা যাতে সুখে সংসার করতে পারে এইজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছে। নইলে সে আত্মহত্যা করে মারা যাবে।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, স্কুলছাত্রী অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পরই পুলিশ অভিযান শুরু করে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রধান আসামি সুমনকে গ্রেফতার এবং অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে।গতকাল বুধবার (১০ই সেপ্টেম্বর) সকালে আটককৃত আসামিকে যশোর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিরাপদ হেফাজতে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। একইসাথে অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান।