আনোয়ার হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
এই রুটে প্রথম ধাপের পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শনিবার সফলভাবে শেষ হয়েছে। রোববার সকালেও আবারও পরীক্ষা দেবে উচ্চগতির এই ট্রেনটি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুন নাগাদ এই পথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার ৮টা ৪১ মিনিটের দিকে ভাঙ্গার রেলওয়ে স্টেশন থেকে এ ট্রেনটি যশোরের রূপদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটি পৌছায় যশোরের রূপদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে। সেখানে প্রায় ১০ মিনিট অবস্থান করার পর আবারো ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় ট্রেনটি।
ট্রেনটি ১২০ কিলোমিটার গতিতে যশোর পৌঁছাতে সময় লেগেছে এক ঘণ্টার কিছু বেশি। সাখাওয়াত হোসেন এ ট্রায়াল ট্রেনে চালকের দায়িত্ব পালন করছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জুন নাগাদ এই পথে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে আশাবাদী তারা।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে এই রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে গ্রুপ’ (সিআরইসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ব্রডগেজ ওই রেলপথে ভাঙ্গা, কাশিয়ানী এবং যশোরের পদ্মবিলা ও সিঙ্গিয়াতে রেলওয়ে জংশন থাকছে। এছাড়া নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল এবং যশোরের জামদিয়া ও রূপদিয়াতে রেলস্টেশন হয়েছে।
কাজের অংশ হিসেবে শনি ও রোববার, এই দুই দিন ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত বিভিন্ন গতিতে ট্রেন চালিয়ে নির্মাণ অবস্থা পরীক্ষা করা হবে। পদ্মাসেতু হয়ে নতুন ট্রেন চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় খুশি যশোরের মানুষ। তারা বলছেন, এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে এই রেলপথ।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-যশোর রেলপথের ভাঙ্গা পর্যন্ত ইতোমধ্যে ট্রেন চলাচল করছে। প্রকল্পের শেষ অংশ ভাঙ্গা থেকে যশোর। এই অংশের দৈর্ঘ্য ৮৭ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০১৬ সালে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি’ অনুমোদন পেয়েছিল।
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন থাকবে, যার মধ্যে ১৪টি নতুন এবং ৬টি ইতোমধ্যে রয়েছে। আগের স্টেশন গুলোর আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে ট্রেনগুলো ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার পথে রয়েছে।