1. admin@ajkerpratidin.com : admin : Khokon Howlader
  2. ajkerpratidin@gmail.com : Masum Sarder : Masum Sarder
  3. emranniloy53@gmail.com : Emran Hasan Neloy : Emran Hasan Neloy
  4. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
  5. rashedapple7@gmail.com : Rashed Ahmed : Rashed Ahmed
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:২৫ অপরাহ্ন

ঘুষ নেওয়ায় বদলি কর্মকর্তাকে জেলায় পদায়নে ৩ এমপির সুপারিশ

আজকের প্রতিদিন ডেস্ক ||
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪
  • ২১৩ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম :
ঘুষ গ্রহণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সাবেক এক শিক্ষা কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে পদায়নের জন্য সুপারিশ করেছেন এই জেলার তিন সংসদ সদস্য (এমপি)। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহপরিচালক বরাবর এই সুপারিশ করেছেন তারা।

পদায়ন প্রত্যাশী ওই কর্মকর্তার নাম খন্দকার আলাউদ্দীন আল আজাদ। তিনি বর্তমানে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তার মূল পদ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

জেলার শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খন্দকার আলাউদ্দীন আল আজাদ ২০১৭ সালে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময় শিক্ষকদের কাছে ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগে তাকে বরগুনায় ‘শাস্তিমূলক’ বদলি করা হয়। পরে কয়েক জেলা ঘুরে তিনি ঠাকুরগাঁও শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে কর্মকালে তার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ ও এমপিও সংক্রান্ত কাজে শিক্ষকদের কাছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ দেয় মাউশি।

তখন থেকে তিনি সেখানে কর্মরত। আরও আগে ২০১৬ সালে পিরোজপুরে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা থাকাকালে তার বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে মাউশির প্রতিনিধি দেওয়ার নামে সাড়ে ২৩ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন স্থানীয় কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

সম্প্রতি এই বিতর্কিত শিক্ষা কর্মকর্তা আবারও কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে পদায়ন ও বদলির জন্য মাউশি মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।

মাউশিতে দেওয়া আলাউদ্দীন আল আজাদের আবেদনের একটি অনুলিপি এই প্রতিবেদকের কাছে এসেছে। সেই আবেদনপত্রের ডান পাশের ওপরের কোণায় তাকে কুড়িগ্রামে পদায়ন ও বদলির সুপারিশ করেছেন কুড়িগ্রাম-২ আসনের এমপি মো. হামিদুল হক খন্দকার।

গত ৫ মে এই সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর ও সিল সংবলিত সুপারিশ নোটে লেখা, ‘ডিজি মাউশি মহোদয়, জরুরি ভিত্তিতে ডিইও (জেলা শিক্ষা অফিসার) কুড়িগ্রাম পদে পদায়ন/ বদলির জন্য বিশেষভাবে সুপারিশ করা হলো।’

একই কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে পদায়নের জন্য সংসদীয় প্যাডে সুপারিশপত্র (ডিও লেটার) দিয়েছেন কুড়িগ্রামের আরেক এমপি (কুড়িগ্রাম-৩) সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে। একই সুপারিশে কুড়িগ্রাম-১ আসনের (নাগেশ্বরী) এমপি এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমানও ডিও লেটার দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ডিও লেটার দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংসদ সদস্য সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে।

দুর্নীতি ও অনিয়মে অভিযুক্ত কর্মকর্তার প্রশংসা করে পুনরায় কুড়িগ্রামে পদায়ন করার সুপারিশ করা সমীচীন হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে এমপি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে বলেন, ‘আমি সবাইকে সাদা চোখে দেখি। তার পূর্বের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। যিনি বদলি বা পদায়ন করবেন ( মাউশি ডিজি) তিনি যেন আমার সঙ্গে একবার ফোনে কথা বলে নেন। আমি আমার ডিও লেটার প্রত্যাহার করে নেবো।’

একজন কর্মকর্তার বিষয়ে সুপারিশ করার আগে তার চাকরি জীবনের পূর্ব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া উচিত কি না, এমন প্রশ্নে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি এখন থেকে সতর্ক থাকবো।’

বিতর্কিত এক সরকারি কর্মচারীর বদলির আবেদনে লিখিত সুপারিশ করার বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম-২ আসনের এমপি মো. হামিদুল হক খন্দকার বলেন, ‘আমিতো জানি না তিনি দুর্নীতিবাজ। সুপারিশ করেছি, অন্য এমপিরা তো ডিও লেটার দিয়েছেন!’

কোনও কর্মচারীর অতীত কার্যক্রম না জেনে সুপারিশ করা সমীচীন কি না, এমন প্রশ্নে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘না তা উচিত নয়। আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। সুপারিশে বদলি হতে পারে , নাও হতে পারে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তার বদলি হবে না।’

একই বিষয়ে জানতে এমপি এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল ও মেসেজ দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

তবে একাধিক সংসদ সদস্য বিতর্কিত এই শিক্ষা কর্মকর্তাকে কুড়িগ্রামে পদায়নের সুপারিশ করলেও এতে ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কুড়িগ্রাম জেলা শাখা এবং জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ। খন্দকার আলাউদ্দীন আল আজাদকে ‘দুর্নীতিবাজ’ উল্লেখ করে তাকে কুড়িগ্রামে পদায়ন না করার অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষকদের সংগঠনগুলো। এই দাবি জানিয়ে মাউশির মহাপরিচালক ও সহকারী পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন সংগঠনের নেতারা।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মো. আব্দুল মালেক বলেন, ‘খন্দকার আলাউদ্দীন আল আজাদের মতো দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে বদলির খবরে জেলার শিক্ষক সমাজের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে আবারও কুড়িগ্রামে পদায়ন করা হলে জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির সম্মুখীন হবে এবং প্রশাসনিক কাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাকে কুড়িগ্রামে পদায়ন না করার জোর দাবি জানাই।’

বদলি প্রত্যাশী খন্দকার আলাউদ্দীন আল আজাদের মন্তব্য জানতে তাকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। মেসেজ পাঠিয়ে পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলেও তিনি সাড়া দেননি।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

Ajker Pratidin গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান ©২০১৮-২০২৫ ajkerpratidin.com সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

Design BY POPULAR HOST BD