নেত্রকোনা প্রতিনিধি, হাবিবুর রহমান :
নেত্রকোনার মদন উপজেলার পৌর সদর দেওয়ান বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে অতি পুরনো সুমনখালী নামের খালটি, ভূমিদস্যুরা হাঁকডাক দিয়ে দিন দিন উপজেলার সরকারি এই খালটি দখল করে নিচ্ছে। খাল দখলে প্রতিযোগীতায় নেমেছে কিছু অসাধু ভুমিদস্যুরা।
উপজেলার দেওয়ান বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুমন খালী বা নালা এক সময় ধান বুঝাই বড় বড় নৌকা এই খাল দিয়ে চলাচল করত। খালটি ভূমিদস্যুদের কারণে আজ কোথাও নিশ্চিহ্ন আবার কোথাও সরু নালায় পরিণত হয়েছে। সেই খালটি নানা কৌশলে দখলে নিলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করতে পারছেন না। তবে নিরব হয়ে চুপ থাকলেও সচেতন মহলের মধ্যে গুঞ্জন চলছে। উপজেলা প্রশাসনের নজরে না আশার কারণে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খালটি দখলে নিয়ে দোকান পাট ব্যবসা-বাণিজ্য
করছে কিছু অসাধু মহল। উপজেলা প্রশাসনও রহস্যজনক কারনে নীরবতা পালন করছে। এতে করে আরও উৎসাহী হচ্ছে ভূমিদস্যুরা। এই সুযোগে ভূমিদস্যুরা দিনের পর দিন খাল দখল করে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক খাল দখল করে স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে খালের মাঝ পর্যন্ত মাটি ভরে ঘর নির্মাণ করেছে ভূমিদস্যুরা। সবকিছু দেখেও উপজেলা প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। মদন পৌর সদরে দেওয়ান বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মগড়া নদীর পাড় থেকে আগের হাওরের মিলিত হয়েছে এই খালটি।
বাঁকে বাঁকে দীর্ঘ এই খালটি
ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক বাড়ি নির্মান করে খালটি দখল করা হয়েছে এবং এর ফলে পানির স্রোত বন্ধ হওয়ায় বিভিন্ন অংশ নালায় পরিনত হয়েছে। এর কারণে বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমা হয়ে উপজেলার দেওয়ান বাজারে বিভিন্ন এলাকা পানি জমে নদী রূপে পরিণত হয়ে যায়। মগড়া নদী থেকে সংযোগ ছিল এই খালটি।খালটি খনন’ করা হলে হাওরে অনেক মাছ আসতো, নদীর সাথে এর সংযোগ থাকার কারণে হাওর থেকে অতি দ্রুত পানি নেমে যেত এতে করে কৃষকের অনেক উপকার হত। এই খালটি দখল করে বাড়িঘর দোকানপাট করায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকা এলাকাবাসীর খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম তালুকদার বাবুল মিয়া বলেন, সুমন খালি খালটি খনন করা অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে এবং এলাকাবাকার সাধারণ মানুষের পক্ষে দাবি জানাই অতি তাড়াতাড়ি এই খালটি খনন’ করার জন্য। এই খালটি দখলে ও মৃতপ্রায় অবস্থার কারণে নৌকায় করে বাজারে আসা, স’মিল ও ধান মিলে ধান নেয়া, বাজারের মালামাল বহনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। এ ছাড়া খালটি নালাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই আশপাশে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। দেওয়ান বাজার সংলগ্ন-এই খালটি ভরাট করে বাড়ি নির্মানের কাজ করার বিষয়টি চোখে পড়ার মতো হলেও প্রশাসন নীরব।
এ বিষয়ে মদন পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম সাইফ তিনি বলেন, পৌরসভার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মগড়া নদী, নদীর পাশেই রয়েছে দেওয়ান বাজার। বাজারের পূর্ব পাশে বয়ে গেছে সুমন খালি নামের এই খালটি হাওরের মিলিত হয়েছে। অতি বৃষ্টি হলে সিলেট, সুনামগঞ্জ ,পাহাড়ি উত্তর অঞ্চল থেকে পানি নেমে আসা হাওরে বন্যায় পরিণত হয়। বন্যা শেষে পানি নামার একটি সুন্দর ব্যবস্থা ছিল এই সুমন খালি খাল দিয়ে, খালটি ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।আর ও একটি খাল রয়েছে আশকী পাড়ার সামনে বেথুইবাড়ি খাল এই দুইটি খাল খননের জন্য আমাদের মাস্টার প্ল্যান রয়েছে।
এই দুটি খাল খনন করা হলে মদন পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সুগম হবে। খাল দুটি খনন’ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে অতি তাড়াতাড়ি এই খালটি খনন করার ব্যবস্থা করব। মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহ আলম মিয়া তিনি বলেন , জনগণের প্রয়োজন হলে আমরা অবশ্যই খালটি খনন করব।