জুয়েল মিয়া, জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর :
পদ্মা নদী চরাচল অঞ্চল দুর্গম এলাকা শরীয়তপুরে চর বিস্তীর্ণ এলাকা গুলোতে রাসেল ভাইপার সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রাম গুলোতে।কৃষকরা জমিতে কাজ করতে গিয়ে সাপের কামড়ে নিহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। বিষাক্ত সাপ রাসেল ভাইপারের দংশনের পর ভাগ্যের জোরে বেঁচে আছেন নারীসহ দু’জন ।
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পাইনপাড়া আহমেদ মাঝির কান্দির গ্রামের সাধারণ মানুষ। সার্বক্ষণিক সাপের সাথে মোকাবেলা করছেন। সরজমিন গিয়ে জানা যায় বেশ কয়েক মাস যাবত রাসেল ভাইপার নামের সাপটি। গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণে দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় তথ্যসূত্রে জানা যায় ফসলি জমির পাশে ও ঝোপঝারের মধ্যে এবং পরিত্যক্ত ঘরবাড়িতে রাসেল ভাইপার সাপের মাটির তৈরি নাকা বা ডিবির মধ্যে থেকে ৪০টির বেশি সাপের ছানা গুলোকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছেন স্থানীয়রা ।
গত কয়েক মাসে দুই শতাধিক সাপ পিটিয়ে মেরেছে বলে জানান স্থানীয়রা। এমন অবস্থায় গ্রামে সাপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাতের বেলা হাটবাজার থেকে ফেরার পথে টর্চ লাইট ব্যবহার করতে হয় পথ চলার সময় লাঠিসোটা নিয়ে পথ অতিক্রম করতে হয়।
গত মাসে রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে আহত হয়েছেন দুইজন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ আছেন খোকন খা (৪৫) নামে একজন। প্রথম জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে এন্টিভেনম বা সাপে কাটাঁ রোগীর ভ্যাক্সিন পাওয়া যায়নি।পরে দ্রুত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয় ভাগ্যক্রমে দুজনই বেঁচে যায় তবে সাপে কাটার স্থানটি এখনো ক্ষতচিহ্ন হয়ে আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বার্তা বাজারকে বলেন বিষাক্ত সাপের কামড় খাওয়া রুগীদের জন্য জেলা ও উপজেলা লেভেলে আ্যন্টি-ভেনম স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি নাই।
কিন্তু এখন আমার সাপে কাটা রুগীর জন্য বিষ পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে এন্টিভেনম দিয়ে রোগীদের সুস্থ করতে সক্ষম হচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে অবশ্যই এক্সপার্ট দিয়ে এন্টিভেনম ফ্যাসিলিটি ১০০% সাপে কাটা রুগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন,সাপে কাটা রুগীকে দূরত্ব হাসপাতালে আনতে হবে। ওঝাবিদদের মাধ্যমে চিকিৎসা নেওয়াটা সঠিক নয়। সাপে কাটা রোগীর জন্য করণীয় ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ভিকটিমের নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, অনেক ক্ষেত্রে icu প্রয়োজন হয়। অনেক ক্ষেত্রে ভিকটিম এন্টিভেনম এর প্রতিক্রিয়ায় মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এর অপ্রতুলতা এবং উপজেলা পর্যায়ে যথেষ্ট সাপোর্ট না থাকায় এবং ভ্যাকসিন প্রদান প্রক্রিয়া প্রথাগত না হওয়ায় সব জায়গায় ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন শরীয়তপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির আলোচনা সভায়। জেলা সিভিল সার্জন জানান, রাসেল ভাইপার সাপে কাটা রোগীর জন্য প্রত্যেকটি উপজেলা পর্যায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। সাপে কামড়ানো রোগীদের জন্য চিকিৎসা দিতে আমরা এখন সক্ষম ও সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।