সম্রাট আলাউদ্দিন, ধামরাই (ঢাকা) : মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। আর মাত্র কয়েক দিন পরেই কোরবানির ঈদ। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে কামার শিল্পীরা। সারাবছর তেমন কাজের চাপ না থাকলেও কোরবানির ঈদ এলেই এই ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেক গুণ।
কোরবানির পশু জবাই ও মাংস বানাতে যেসব উপকরণ প্রয়োজন হয়, সেই সব উপকরণ তৈরি করতে এবং ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরি করা হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন সাইজের ধারালো চাপাতি, ছুরি, দা, বঁটি সহ বিভিন্ন উপকরণ।আর এগুলো তৈরি করতে কারিগররা কেউ টানছেন হাপর, কেউ আবার কয়লা দিচ্ছে আগুনে। সেই জ্বলন্ত আগুন থেকে লোহা তুলে সমানতালে পেটাচ্ছেন তাঁরা। সেই পেটানো তপ্ত লোহা থেকে তৈরি করা হচ্ছে চাপাতি, ছুরি, দা, বঁটি সহ বিভিন্ন উপকরণ।
কোরবানির আগে এসব উপকরণ হাতের কাছে সংগ্রহ ও প্রস্তুত রাখতে এখন ব্যস্ত কোরবানির পশু কেনায় সচ্ছল পরিবারগুলো।তাই ঈদ আসার ৮ থেকে ১০ দিন আগে থেকেই এই ব্যস্ততা বাড়ে যায় কামার শিল্পীদের। চলে ঈদের আগের শেষ রাত পর্যন্ত। তবে ঈদ মৌসুমে সকাল ৮টা থেকেই তাদের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়, আর চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।
এমনকি ঈদের আগের রাতেও তাদের কাজ করতে হয় সারারাত জেগে।সারা বছর দা ছুরিতে শাণ দিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা নেওয়া হলেও কোরবানির সময় নেওয়া হয় ৫০ থেকে ৮০ টাকা।লিটন কর্মকার বলেন, সারা বছরই কাজ থাকে। কিন্তু কোরবানির সময় কাজ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। আয়ও বাড়ে। গৃহস্থ বাড়ির সবাই দা, ছুরি, ছেনি, চাকু, বঁটিতে শাণ দিতে আসেন। তাই এই সময়ের জন্য প্রস্তুতিটাও থাকে একটু ভিন্ন।
বছরের এই সময়ে দিনে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয় বলে জানান তিনি। তবে কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আর আগের মতো লাভ হচ্ছে না। বস্তা প্রতি কাঠ কয়লার দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বেড়েছে কারিগরের মুজুরীসহ লোহার দাম। তাই লাভ অনেক কমে গেছে। তারপরও বাপ-দাদার পেশা টিকিয়ে রাখতে সবাই কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।