সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি ||
সারাদেশে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে এ মশাল মিছিল শুরু হয়। দীর্ঘ ১ ঘণ্টা স্থায়ী হওয়া মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে সমাপ্ত হয়। তখন শিক্ষার্থীরা একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, “গতকাল আমরা যখন আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করতে গিয়েছিলাম তখন পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণরা তাদেরকে হারিয়ে দিয়েছে।
আমাদের যেরকম পুলিশ বাধা দিয়েছে ঠিক সেরকম ভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে হামলা, নির্যাতন, গ্রেফতার চালানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে সারা বাংলাদেশের ন্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মশাল মিছিলের মাধ্যমে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। আমাদের এক দফা দাবির পাশাপাশি আমরা বলতে চাই, গতকাল আমাদের ভাইদের ওপর যে হামলা হয়েছে, নির্যাতন হয়েছে তার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। অতি দ্রুত যেসব অতি উৎসাহী পুলিশ, সরকারি গুন্ডা-পাণ্ডারা আমাদের ভাইদের ওপর হামলা চালিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে আর না হয় এর ফল রাষ্ট্রকে ভোগ করতে হবে। গতকালকে হাইকোর্টের সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে সরকার চাইলে কোটা বাড়াতে কমাতে পারবে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, অতি দ্রুত কোটা সংস্কার করে আইন প্রণয়ন করে আমাদের পড়ার টেবিলে যাওয়ার সুযোগ করে দিন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার সদস্য সচিব মাহফুজুল ইসলাম মেঘ বলেন, “আজকে মিছিল করতে গিয়ে আমাদের ঘাম ঝরেছে, এই আন্দোলন করতে গিয়ে যদি আমাদের রক্তও ঝরে তবুও আমরা এই আন্দোলন থামাব না। গতকাল যে ভাইয়ের উপর হামলা হয়েছে, রক্ত ঝরেছে তার সুষ্ঠু বিচার আমরা চাই। আপনারা কয়জনকে মারবেন? কয়জনকে আটকাবেন? একজনের পরিবর্তে একলক্ষ শিক্ষার্থী দাঁড়াবে। দুইদিন আগে আমাদের জানানো হয়েছিল, তারা ২৮ দিনের মূলা ঝুলিয়েছে। অথচ কালকের আন্দোলন দেখে তারা রবিবারে রায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মানে বোঝা যায়, আমাদের এই আন্দোলন অতি শীঘ্রই সফল হতে যাচ্ছে। আপনারা হতাশ হবেন না, ভেঙে পড়বেন না। আমরা যে সাহস দেখাচ্ছি তা বাংলার মাটিতে একটি ইতিহাস হিসেবে রচিত হচ্ছে।