নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ১ সপ্তাহ যাবত সাভার-আশুলিয়া উপজেলা পর্যায়ের পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট। তেল না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। অনেকে বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনছেন।
এমন সংকটের জন্য বোতলজাত সয়াবিন তেলের ডিলার এবং কোম্পানিকে দোষারোপ করছেন দোকানি ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, তেলের সঙ্গে একই কোম্পানির চাল-ডাল, সুজি, হলুদ ও মসলা না নিলে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। কোম্পানিগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাদের যেসব পণ্যের চাহিদা বাজারে নেই, সেসব পণ্য না রাখলে তেল দিচ্ছেন না। এমনকি সয়াবিন তেল বিক্রিতে কোনো ধরনের মুনাফা দিতেও রাজি নন তারা। এজন্য দোকানে তেল রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। যারাই তেল কিনতে আসছেন, দোকানিরা বলছেন নেই। একাধিক দোকান ঘুরেও তেল পাননি অনেকে। তাদের প্রশ্ন, তেলের কি সংকট চলছে?
অনেকে বড় দোকানে তেল না পেয়ে পাড়া-মহল্লার দোকানে যান। একই অবস্থা দেখে দোকানির সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান ক্রেতারা। এমন এক ক্রেতাকে উদ্দেশ্য করে তখন দোকানি বলেছেন, কোম্পানিগুলোর বেঁধে দেওয়া শর্তে রাজি না হওয়ায় তেল দিচ্ছে না। এজন্য দোকানে তেল নেই।
তেল না পেয়ে ভোগান্তির কথা জানিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার ভারাটিয়া মোছাঃ রোজিনা বেগম বলেন, ‘অন্তত ছয়টি দোকান ঘুরেছি। কোনও দোকানে তেল নেই। সবাই বলছেন, নেই-নেই। এটা তো আমাদের জন্য ভোগান্তি। দোকানিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, কারণ কারও দোকানেই তেল নেই।’ আর যাও কিছু দোকানে তেল আছে তাদের থেকে তেল নিতে হলে তেলের সাথে চাল অথবা আটা নিতে হবে।
সাভার-আশুলিয়ার উপজেলা পর্যায়ের দোকানগুলোতে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এতে অনেক ক্রেতা মনে করছেন, সংকট। তবে বাস্তবে কোম্পানির বেঁধে দেওয়া শর্তের কারণে তেল রাখছেন না দোকানিরা।
সাভার উপজেলার বাসিন্দা রিক্সা চালক মান্নান বলেন, ‘আমাদের উপজেলার খুচরা ও পাইকারি দোকানগুলোতে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। সংকট মনে করে আমরা খোলা তেল কিনছি। পরে শুনেছি, সংকট নেই। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা শর্ত মেনে তেল বিক্রি করছেন। ওই শর্তে তেল কিনলে খুচরা বিক্রেতাদের লাভ হয় না। এজন্য তারা কোনও কোম্পানির তেল দোকানে রাখছেন না।
কেন এমন শর্ত
কেন এমন শর্ত দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে একটি কোম্পানির সাভারের ডিলার বলেন, ‘কোম্পানির এ ধরনের পলিসির বিষয়ে আমার জানা নেই। কোম্পানি থেকে বিক্রয় প্রতিনিধি দেওয়া হয়। তারা দোকানে গিয়ে পণ্যের চালান কাটেন। তাদের অর্ডারমতো গুদাম থেকে তেল দোকানে পাঠাই আমরা। কাজেই বিক্রয় প্রতিনিধিদের এ ধরনের শর্তের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে পাঁচ-ছয়টি সয়াবিন তেল কোম্পানির সাভার ও আশুলিয়ার বিক্রয় প্রতিনিধি এবং এরিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানিয়েছেন, এটাই কোম্পানির পলিসি। তাদের যেভাবে কোম্পানির পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, সেভাবে শর্ত বেঁধে দিয়ে পণ্য বিক্রি করছেন তারা।