ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ সৌন্দর্যে আর সৌরভ এ মন জুড়িয়ে নেয় যে জিনিসটা ‘তার নাম ফুল’। ফুল ভালোবাসেনা, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর প্রকৃতিতে যা কিছু শুভ ও সুন্দর তার মধ্যে ফুলকে অন্যতম প্রতিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যখন এই ফুল চাষই হয়ে উঠে জীবন নির্বাহের প্রধান মাধ্যম, তখন অর্থনীতির চাকা তো ঘুরে যাবেই।
উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও,এ অঞ্চলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে ধীরে ধীরে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করে বেশ কয়েকজন কৃষক তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন এ অঞ্চলের আবহাওয়া ও জমির মান ভালো থাকায় ফুল চার্জ হতে পারে ঠাকুরগাওয়ের অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা।
ঠাকুরগাঁয়ে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ,গোলাপ,গাদা,রজনীগন্ধা সহ জাতের ফুল উৎপাদন করে স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ফুল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নার্গুন ও বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষি উদ্যোক্তা আর ফুল চাষকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে অনেকের কর্মসংস্থান।
ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখা যায়,নার্সারি পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে কিছু ফুল চাষ ও চারা উৎপাদন করে জেলার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, ফুল চাষ লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসলের চেয়ে অল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এখন ফুল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
তাদের দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অন্যান্য এলাকার স্থানীয় কৃষকরা আর ফুল চাষকে কিরে সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থান,এছাড়াও ফুলের উৎপাদন ভালো হয় আশপাশের অন্যান্য চাষিরা আগ্রহী হয়ে উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।আর রংবেরঙের বিভিন্ন জাতের চাষাবাদকৃত ফুটন্ত ফুল ও ঘ্রাণ নিতে ছুটে আসছেন অনেকেই।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৯ নং বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের একজন ফুল চাষী আলিপুর রহমান গোলাপ, গাঁদা,রজনীগন্ধা সহ বিভিন্ন জাতের উন্নতমানের ফুল চাষ করছেন তিনি। স্থানীয় শ্রমিকদের যত্নে চাষাবাদকৃত চোখ জুড়ানো ফুটন্ত এসব ফুল দ্রুতই বেড়ে উঠেছে। সরবরাহ করা হচ্ছে বাজারে সামাজিক রাজনৈতিক সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের কদর থাকায় একটা সময় অন্যান্য জেলা থেকে স্থানীয় বাজারে চাহিদা পূরণ করা হলো এখন নিজ জেলায় উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন জাতের ফুল।
৪ বছর আগে প্রথমে অল্প পরিসরে ফুল চাষ করলেও, বর্তমানে প্রায় ২ এককর জমিতে বাণিজ্যিভাবে ফুল চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন তিনি। ওয়ালিউর রহমানের বাগানের ফুল ঠাকুরগাঁও জেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলা শহরের বাহিরে ও দেশের বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে ফুল রপ্তানি করতেছেন। তার এই ফুল চাষের ঠাকুরগাঁও জেলায় অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা তৈরি হবে আশা করছেন ।
এ বিষয়ে আলিউর রহমান জানেন, আমি প্রথমে অল্প পরিমানে ফুল চাষ করেছিলাম চার বছর আগে। ফুল চাষে লাভবান হয় বর্তমানে আমার প্রায় দুই একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ রয়েছে। ১৪ই ফেব্রুয়ারি এবং একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে আমার ফুল চাষের বেশ লাভের আশা করতেছি। বাজার দর সব ঠিক থাকলে এখান থেকে আমার বেশ ভালো পরিমান লাভ আশা করতেছি। যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলার জমি ফুল চাষের জন্য উপযোগী। অন্যান্য কৃষকরা যদি ফুল চাষের দিকে আগ্রহ হয় তাহলে ফুল চাষে ঠাকুরগাঁও জেলায় অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি কৃষকরা ফুল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ ফুল চাষিদের বিভিন্ন রকম পরামর্শ ও সেবা প্রদান করছেন, সেই সঙ্গে কৃষকদের ফুল চাষে উৎসাহিত করছেন।
অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এ জেলায় ফুল চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে একদিকে যেমন লাভবান হবেন কৃষক, অন্যদিকে কৃষি অর্থনীতিতে যোগ হবে নতুনমাত্রা- এমনটাই জানান কৃষি বিভাগের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রায় ৫ এককর জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে।