সম্রাট আলাউদ্দিন, ধামরাই (ঢাকা) : ঢাকার ধামরাইয়ে মাটিকাটার ভেকুর ব্যাটারী চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে অফিসের ভিতরে আটকিয়ে পিটিয়ে এবং ক্যারেন্টের শর্ট দিয়ে মোঃ ফজল হক ফজুকে (৩৫) নামে এক যুবককে চুরের অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে আটজনকে আসামী করে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এই ঘটনায় আব্দুল মান্নান নামে আরেক জনকে মুমূর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত রবিবার (৭জুলাই) দিনগত রাতে নিহত ফজলহক ওরফে ফজুর মা আছিয়া বেগম বাদী হয়ে আটজনকে আসামী করে ধামরাই থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে শনিবার (০৬জুলাই) তিনগত রাত ১০টার দিকে ধামরাই উপজেলার আমতা ইউনিয়নের বাউখন্ড গ্রামে হত্যা কান্ডের ঘটনাটি ঘটে।আসামীরা হলেন, আমতা ইউপি সদস্য মোঃ আলকেছ আলী, মোঃ মীরহোসেন পিতা শাজাহান, মোঃ আলতাব হোসেন পিতা শামছুল হোসেন আমতা ইউনিয়নের নয়াচর গ্রাম, মোঃ আলামিন, ছোট আলামনি, মোঃ আইয়ুব আলী, মোঃ রতন মিয়া, মোঃ শফিকুল ইসলাম এরা সবায় আমতা ইউনিয়নের নান্দেশ্বরী গ্রামের বাসিন্দা।মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, আমতা ইউনিয়নের নান্দশ্বরী গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী আলকেছ মেম্বার, মীরহোসেন, আলামিনম আলতাব হোসেন, আইয়ুব আলী, রতন ও শফিকুল মিলে ব্যবসা করছে।
রাতের বেলায় মাটি কাটার ভেকু রেখে সবায় বাড়ী চলে যায়। সেই রাতেই বৃহস্পতিবার মাটিকাটার ভেকু থেকে ব্যাটারী চুরি হয়। শনিবার বেলা ১২টার দিকে মানিকগঞ্জে সেই ব্যাটারী বিক্রি করতে গিয়ে বাউখন্ড এলাকার মান্নান নামে একযুবক সেখানে ধরা পরেন। এই খবর মেম্বার আশরাফ কে মানিকগঞ্জ থেকে দোকানদার ফোন করে জানান। সেই খবর আশরাফ মেম্বার মাটি ব্যবসায়ী আলকেছ মেম্বারকে জানান। আলকেছ মেম্বার সাথে সাথে আলামিন, রতন ও আইয়ুবকে মানিকগঞ্জ পাঠায় চুর ও ব্যাটারীকে উদ্ধার করার জন্য। পরে আলামিন, রতন ও আইয়ুব মানিকগঞ্জ গিয়ে চুর মান্নানকে আটক ও ব্যাটারী উদ্ধার করে নান্দেশ্বরী গ্রামে নিয়ে আসে।এরপর মান্নানকে জিজ্ঞাসা করলে সে বাউখন্ড গ্রামের মৃত মোন্তাজ উদ্দিনের ছেলে ফজল হক (ফজু) নাম বলে। সেই সাথে মান্নানের ফোন দিয়ে ফজুকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করে কোথায় আছ বললে ফজু বলে আমি বাউখন্ড গ্রামের গাজী পাথর এলাকায় আছি। তখন আলামিন রতন ও আইয়ুব দ্রুত সেখানে গিয়ে ফজল হক সফজুকে ধরে মারধর করতে করতে নান্দশ্বরী মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশে আলামিনের অস্থায়ী অফিসে নিয়ে বেঁধে মারধর করেন এবং ক্যারেন্ট শর্ট দেয়। পরে সেই আবস্থায় ফজুর দুই হাত ভেঙে ফেলে। অবস্থার বেগতিক দেখে বড়নারায়নপুর গ্রামের মেম্বার মোঃ আশরাফ আলীকে খবর দিয়ে তার জিম্মায় ফজল হক ফজু ও মান্নানকে ছেড়ে দেয়। পরে ফজলহক বাড়ীতে যাওয়ার দুই ঘন্টা পর বমি করতে করতে মারা যায়। অপর দিকে মান্নানকে মুমূর্ষ অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
এই বিষয়ে নিহত ফজল হকের মা আছিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে কোন দিন চুরি করে নাই। আমার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য তার নাম বলেছে। একজন লোকের নাম বললেই কি সে চুর হয়ে যায়। আমার ছেলেকে ভুমিদৃশ্য মাটি ব্যবসায়ী আলামীন,রতন,আইয়ুব, আলকেছ, মীরহোসেন ও শফিকরা মিলে মারতে মারতে মেরে ফেলেছে। আমি এর বিচার দাবি করছি আইনের কাছে।
এই বিষয়ে কাওয়ালীপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারের কাজ চলছে। দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।