আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি ||
আশুলিয়ার একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের চার বছরের মেয়েসহ একই পরিবারের তিনজনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আশুলিয়ার উত্তর ভাদাইল এলাকার বাচ্চুর নিজ বাসা থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার হয়।
নিহতরা হলেন, বাড়ির মালিক এম এ হাসান বাচ্চু, তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম ও তাদের কন্যা সন্তান মোছা. জান্নাতী। বাচ্চু তার স্ত্রী ও ছোট সন্তানকে নিয়ে চারতলা বাড়ির চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। ফ্ল্যাটের পাশের একটি কক্ষে তার ১৮ বছর বয়সী বড় ছেলে হিমেল থাকে। প্রতিবেশীরা বলছেন, দাম্পত্য কলহের জের ধরে তাদের মৃত্যু হতে পারে।
এলাকাবাসীরা জানায়, দুপুরে এই এলাকায় বাচ্চু মিয়ার মালিকানাধীন চতুর্থ তলার ভবন থেকে বাচ্চুর বড় ছেলে হিমেল চিৎকার করে এলাকাবাসীর সাহায্য চায়। তার বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। এসময় তারা বাচ্চুর দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পায়। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে তিনজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের মধ্যে বাচ্চুর শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
প্রতিবেশী ফরিদা বেগম বলেন, সকাল বেলা স্বপ্না আমার সঙ্গে কথা বলে তার মেয়েকে নিয়ে বাড়ির পাশে স্কুলে নিয়ে যায়। ১০ টার দিকে মেয়েকে নিয়ে ফিরে আসে স্বপ্না। এ সময় বাচ্চু, তার স্ত্রী স্বপ্না ও ছোট মেয়ে বাসায় ছিল। পাশের রুমেই তাদের বড় ছেলে ঘুমাচ্ছিলো। হঠাৎ তাদের বড় ছেলে রুমের দরজার নিচ দিয়ে ধোঁয়া বের হতে দেখে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করে। তার চেঁচামেচিতে স্থানীয় লোকজন দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বাচ্চু, তার স্ত্রীসহ ছোট সন্তানকে বিছানার ওপর অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। সে সময় বিছানার জাজিমে আগুন থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে বাচ্চু ও তার স্ত্রীর মধ্যে কোন ঝামেলা হয়েছিল। এ কারণে কক্ষের ভেতর তারা নিজেরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বাচ্চুর গালে জখমও দেখেছি। তাছাড়া তো আর কোনও কারণ দেখি না।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন র্যাবের সদস্যরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিন।
জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ভাদাইলে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর খবর জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে একই পরিবারের তিন জনের রহস্যজনক মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার কৌতূহলী মানুষের বাচ্চু বাড়িতে ভিড় জমায়।